Get Mystery Box with random crypto!

তামির (ছদ্মনাম) নামে এক ভাইয়ের গল্প বলি। তার স্ত্রী ও দুটি মেয় | হালাল রোমান্টিসিজম

তামির (ছদ্মনাম) নামে এক ভাইয়ের গল্প বলি। তার স্ত্রী ও দুটি মেয়ে ছিল। তার স্ত্রী বরাবরই ছিল স্বার্থপর এবং লোভী মহিলা। কিন্তু মেয়েদের কথা ভেবে তামির তাকে সহ্য করছিলেন। এই মারমুখী, অত্যাচারী স্ত্রীর সাথে খুবই কষ্টের দাম্পত্য-জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। হয়তো স্ত্রীকে সহ্য করতে হবে, কিন্তু বিনিময়ে অন্তত কন্যাদের উজাড় করে ভালোবাসার সুযোগটুকু মিলবে।
.
ওই মহিলা একসময় ইবাদাত-বন্দেগি বন্ধ করে দিল। হিজাব বাদ দিয়ে দিল। নাকে প্লাস্টিক সার্জারি করল। তারপর ইসলামই ত্যাগ করে ফেলল প্রকাশ্যে।
.
একসময় পরকীয়া করতে শুরু করে তার স্ত্রী। ব্যভিচার করতে থাকে। তামির সব জানতে পারার পরও এসব নির্লজ্জতা বাদ দেয়নি সে। তার মধ্যে কোনো অনুশোচনাও ছিল না। উল্টো তামিরকেই অপমান করে।
.
তারপর এই মহিলা বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করে। আদালতে মিথ্যা বলে। দাবি করে যে, তামির তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। আর কথিত “ধর্মীয় নির্যাতন” তো আছেই। সে তামিরকে আরব-মুসলিম জঙ্গী বলে অভিযুক্ত করে।
.
আদালতে চলল তার কুমিরের কান্না এবং দুঃখের নাটক। দুর্দান্ত অভিনেত্রী ছিল এই মহিলা।
.
তামির সেখানে দাঁড়িয়ে তার অভিনয় দেখে হতবাক হয়ে গেলেন। তাকিয়ে রইলেন স্তব্ধ হয়ে। তার আরব পরিবার তাকে জনসম্মুখে কাঁদতে শেখায়নি।
.
বিচারক বিশ্বাস করে বসলেন সবকিছু। কারণ অসহায়, নিপীড়িত মুসলিম মহিলার ছাঁচের জন্য সে ছিল সম্পূর্ণ উপযুক্ত। আর তামির উপযুক্ত ছিলেন অত্যাচারী মুসলিম পুরুষ হিসেবে।
.
ডিভোর্সের পরে এই মহিলা তাকে অর্থের জন্য রীতিমতো লুট করে ফেলে। তামির ছিলেন ছোটখাটো একটি ব্যবসার মালিক। এই মহিলা তাকে সেটা বন্ধ করতে বাধ্য করে। তার সমস্ত সঞ্চয় আত্মসাৎ করেই ক্ষান্ত হয় না। সেই সাথে নিজের উঁচু দরের ডিভোর্স ল’ইয়ারের পারিশ্রমিক দিতেও বাধ্য করে তামিরকে।
.
আর বাচ্চাদের ব্যাপারে সে যা করে, তার তুলনায় এসব কিছুই না। সে মেয়ে দুটোর সম্পূর্ণ কাস্টডি পেয়ে গেল। অথচ এরা ছিল তামিরের গোটা পৃথিবী। কয়েক বছর সে তামিরকে মেয়েদের সাথে দেখাই করতে দেয়নি। স্নেহময় বাবা তখনো বড় মেয়েটির স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে।
.
সে প্রায়ই বাবার জন্য কাঁদত। জিজ্ঞেস করত কেন সে তার বাবাকে আর দেখতে পারবে না। তার মা নির্লজ্জভাবে মিথ্যা বলে যে, বাবা তাকে ভালোবাসে না, তাকে দেখতেও চায় না। নির্বিকারভাবে ছোট মেয়েটিকে কাঁদতে দেখত সে। মাসের পর মাস প্রতিরাতে কেঁদে কেঁদে ঘুমাত মেয়েটা।
.
ওদিকে তামিরও প্রতিরাতে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েন। একসময় কাটতে শুরু করে নির্ঘুম রাত।
.
প্রাক্তন স্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে তার জীবনের একমাত্র আশা কেড়ে নিয়েছে। সে জানে মেয়েগুলো ছিল তামিরের জীবন। তাকে আরও যন্ত্রণা দেয়ার জন্য তার প্রাক্তন স্ত্রী জানাল যে, সে তার মেয়েদের ব্যাপ্টাইজড করেছে। তাদের প্রতি রবিবার চার্চে নিয়ে যায় সে তার নতুন খ্রিষ্টান স্বামী টমির সাথে।
.
প্রতিটি হানানের বিপরীতে রয়েছে কোনো-না-কোনো তামির। কিন্তু তামিররা প্রকাশ্যে কাঁদে না। তাদের গল্পগুলো সহজে শোনায় না। হানানরা শোনায়। তাই আমরা কেবল সেগুলোই দেখি। ধরে নিই যে, তামির বলে কিছু নেই।

বই- সংসার ভাবনা
লেখক- ড্যানিয়েল হাকিকাতযু, উম্মে খালিদ, শাইখ ইউনূস কাথরাদা ও গুল আফশান
https://t.me/HalalRomanticism