Get Mystery Box with random crypto!

প্রিয় বোন! আপনার স্বামী যখন বন্দী, তখন আপনার কী করণীয়? [১ম পর্ | আন নুসরাহ - النصرة

প্রিয় বোন! আপনার স্বামী যখন বন্দী, তখন আপনার কী করণীয়? [১ম পর্ব]


হে বোন! আপনার স্বামী যখন বন্দী, আপনার দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে জেনে নিন-

বন্দীত্ব বড়ই কষ্টের জীবন। বন্দীত্বের কষ্ট পুরোমাত্রায় অনুধাবন করা কেবল একজন বন্দীর পক্ষেই সম্ভব। আর আল্লাহ তো সর্বজ্ঞানী। বন্দীত্ব একজনের জীবনে বড় এক বিপদের অধ্যায়। নৈকট্যের ক্রমানুসারে একজন বন্দীর পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই- বোন ও অন্যান্য স্বজনরা এই বিপদে কম বা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। কারাগারে একজন বন্দীর দিন যত বাড়তে থাকে উক্ত ক্ষতির পরিধিও ততই বেড়ে যায়। তবে সার্বিক বিচারে দেখা যায়, একজন নারী তার স্বামীর বন্দীতে সবচেয়ে বেশী পারিপার্শ্বিক জটিলতার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। এজন্যই এ পর্বের নাসীহা এ সকল বোনদের উদ্দেশ্যে, যাদের স্বামীগণ কারাগারে বন্দী।
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, কেউ স্বেচ্ছায় বন্দী হতে বা কোন বিপদে পতিত হতে চায় না। জীবন চলার পথে এটা একটা দুর্ঘটনা মাত্র। সুতরাং বিপদ যখন এসেই গেল এ সম্পর্কে আল্লাহর বাণী দেখে নেই, আল্লাহ বলেন:


مَاۤ اَصَابَ مِنۡ مُّصِیۡبَۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ نَّبۡرَاَہَا ؕ اِنَّ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرٌ
পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।

لِّکَیۡلَا تَاۡسَوۡا عَلٰی مَا فَاتَکُمۡ وَ لَا تَفۡرَحُوۡا بِمَاۤ اٰتٰىکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ کُلَّ مُخۡتَالٍ فَخُوۡرِۣ
এটা এজন্যে বলে দেয়া হল যাতে তোমরা যা হারাও তার জন্যে দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তার জন্যে উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোন উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না। (সূরা হাদীদ-৫৭: ২২-২৩)


সুতরাং,বিপদের শুরুতেই-

১. ইমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এই বিশ্বাসের পূর্ণতায় “যে বিপদ এসেছে তা আসারই ছিল, যা হারিয়েছে তা হারানোরই ছিল”|

২. আল্লাহর উপর সন্তুষ্টি জানাতে হবে, অন্তর থেকেই বলতে হবে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”| আল্লাহর রহমতের সূচনা হবে এখান থেকেই, আল্লাহ বলেন:


الَّذِیۡنَ اِذَاۤ اَصَابَتۡہُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا لِلّٰہِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡہِ رٰجِعُوۡنَ
যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।(সূরা বাকারাহ-০২: ১৫৬)

اُولٰٓئِکَ عَلَیۡہِمۡ صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ رَحۡمَۃٌ ۟ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُہۡتَدُوۡنَ
তারাই সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত। (সূরা বাকারাহ-০২: ১৫৭)

৩. আল্লাহর নিকট সবরের দু‘আ শুরু করতে হবে।

৪. এই বিপদের প্রতিটি মুহূর্তের বিনিময়ে আমার জন্য যেন প্রতিদান লিখা হয়, মুহূর্তগুলো যেন আমার গুনাহের কাফফারা হয়; তার জন্য নিয়াতকে খাটি করতে হবে এ মর্মে যে, আমার সবর ও কষ্ট কেবল আল্লাহরই সন্তুষ্টির জন্য। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

وَعنْ أَبي سَعيدٍ وأَبي هُرَيْرة رضيَ اللَّه عَنْهُمَا عن النَّبيِّ صلّى الله عليه وسلّم قَالَ: مَا يُصِيبُ الْمُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ وَلاَ وَصَبٍ وَلاَ هَمٍّ وَلاَ حَزَن وَلاَ أَذًى وَلاَ غمٍّ، حتَّى الشَّوْكَةُ يُشَاكُها إِلاَّ كفَّر اللَّه بهَا مِنْ خطَايَاه متفقٌ عَلَيهِ.

আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মুসলিমকে যে কোনো ক্লান্তি, অসুখ, চিন্তা, শোক এমন কি (তার পায়ে) কাঁটাও লাগে, আল্লাহ তা'আলা এর মাধামে তার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন।"–সহীহুল বুখারী ৫৬৪২, মুসলিম ২৫৭৩, তিরমিযী ৯৬৬, আহমাদ ৭৯৬৯, ৮২১৯, ৮৯৬৬, ১০৬২৪

عَنْ أبي يَحْيَى صُهَيْبِ بْنِ سِنَانٍ عن رسول الله -صلّى الله عليه وسلّم- أنّه قال: (عَجَبًا لأَمْرِ المُؤْمِنِ، إنَّ أمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ، وليسَ ذاكَ لأَحَدٍ إلَّا لِلْمُؤْمِنِ، إنْ أصابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ، فَكانَ خَيْرًا له، وإنْ أصابَتْهُ ضَرَّاءُ، صَبَرَ فَكانَ خَيْرًا له)

আবু ইয়াহিয়া সুহাইব ইবনু সিনান রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক! তাঁর প্রতিটি কাজে তাঁর জন্য মঙ্গল রয়েছে। এটা মুমিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়। সুতরাং তাঁর সুখ এলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ফলে এটা তার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর দুঃখ পৌঁছলে সে ধৈর্য্য ধারণ করে। ফলে এটাও তাঁর জন্য মঙ্গলময় হয়।”–মুসলিম ২৯৯৯, আহমাদ ১৮৪৫৫, ১৮৪৬০, ২৩৪০৬,২৩৪১৯, দারেমী ২৭৭৭

———————————
চলবে…ইনশা আল্লাহ

সূত্র: https://dawahilallah.com