Get Mystery Box with random crypto!

দাঈ র ভাষা এমনই হবে---- উস্তাদে মুহতারাম আল্লামা মুফতী ত্বকী | আন নুসরাহ - النصرة

দাঈ র ভাষা এমনই হবে----

উস্তাদে মুহতারাম আল্লামা মুফতী ত্বকী উসমানী সাহেব বয়ানে একদিন ইসমাইল শহীদ রহমাতুল্লাহ আলাইহির ঘটনা শুনাচ্ছিলেন।
' শাহ ইসমাঈল শহীদ রহ. একদিন বয়ান করতেছিলেন। শ্রোতাদের থেকে কট্টর বিদআতী একজন ইসমাঈল শহীদ রহ কে ঘায়েল করতে দাঁড়িয়ে হঠাৎ তিনটি প্রশ্ন করে বসলেন, এর একটি ছিলো---
শুনেছি আপনি " হারামজাদা"।
এমন কথা আমাদেরকে কেহ বললে উত্তরে বলতাম, " তুই হারামজাদা, তোর বাপদাদা হারামযাদা। তিন্তু তিনি শান্তভাবে নবীওয়ালা দাঈর সিফাতে উত্তরে বললেন-- ' ভাই আপনি ভুল ধারণায় আছেন। আমার আব্বার বিবাহে যে দুইজন সাক্ষী ছিলেন, তারা এখনো দিল্লীতে জীবিত আছেন। আপনি তাদের সাথে কথা বললে বুঝতে পারবেন, আমি অবৈধ নই,বৈধ সন্তান। ""
হযরত ত্বকী সা দা বা এরপর নিজের ইসলাহের ঘটনা শুনালেন। হযরত বলেন, ভ্রান্ত আকিদা নিয়ে প্রায় আড়াইশ পৃষ্টার কিতাব লিখে আব্বাজান মুফতী শফি রহ. কে দেখানোর পর তিনি আমাকে যে নসীহত করলেন তা আমার বয়ান ও লেখালেখির জীবনে অনেক বড় পাথেয় ছিলো। বরং সেই উসূলের উপর ভিত্তি করেই আজ আমার বিচরণ আলহামদুলিল্লাহ।
আব্বাজান রহ.বললেনঃ
"" তুমি কি মানুষের বাহ-বাহ পাওয়ার জন্য , বড় হিসাবে পরিচিতির জন্য কিতাব লিখেছো? না আল্লাহর রেযামান্দি ও মানুষকে ভ্রান্তি থেকে ফিরিয়ে আনতে লিখেছো?
যদি বাহ বাহ পাওয়া মাকসাদ হয় তাহলে ঠিক আছে।
তোমার আক্রমনাত্মক ভাষা তোমার মাসলাক ও তোমার ভক্তদের কাছে তো বেশ বাহবাহ পাবে। কারন বিপক্ষকে বেশ ঘায়েল করার ভাষা প্রয়োগ করেছো। আর যদি হেদায়েতের নিয়তে লিখে থাকো, এই কিতাব তো তারা হেডিং দেখেই রেখে দিবে। তাই ভাষা পরিবর্তন করে নবী ওয়ালা দাওয়াতের ভাষায় লিখো। নিশ্চয় কুরআনের মেযাজ লক্ষ করেছো। আল্লাহ তাআলা আলেমুল গায়েব। তিনি জানতেন ফেরআউন হেদায়েত পাবেনা। তারপরও বলছেন
فقولا له قولا لينا لعله يتذكر او يخشي
তোমরা ( মুসা ও হারুন আঃ) ফেরআউনের সাথে একেবারে নরম ভাবে কথা বল ( قولا لينا مفعول مطلق )
হয়তো সে নসীহত গ্রহন করবে অথবা ভয় পাবে।
নবীদের ঘটনাবলীতে নবীগনের ভাষা কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন, কাফেররা নবীদের পাগল, কবি, যাদুকর গনক অজ্ঞ সহ কত নগ্ন ভাষায় গালমন্দ করছে অথচ নবীদের জবাব কি ছিলো?
اني رسول من رب العالمين
না, আমি তো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল মাত্র।""
হযরত বলেন, আব্বাজান রহ এর নসীহত মতে কিতাবের ধরন তো পরিবর্তন করেছি, কিন্তু অনেক কষ্ট হয়েছে। কারন লেখালেখির প্রারম্ভিক সেই সময়ে আজকের মতো কলম ধরলেই লিখতে পারতামনা। তারপরও আব্বাজানের এই তারবিয়্যাতে আমার সারাজীবনের পুঁজি হয়ে গেছে। আমার বয়ান আর লেখা সেই উসূলের ভিত্তিতেই সেই থেকে এখনো এভাবেই আলহামদুলিল্লাহ।
আর এটাই শরীয়তের মেযাজ। যা বড়দের থেকে অর্জন করতে হয়। আব্বাজান রহ আমাদেরকে এভাবেই ইসলাহ করতেন।
দারুল উলুম করাচীর পন্চাশ সালা জলসায় বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব হযরত উবাইদুল হক সা রহ এর বয়ানের বিষয়বস্তু ছিলো
"" علماے كرام كي تنزلي كے اسباب ""
- উলামায়ে কেরামের অধপতনের কারন ""
খতীব সাহেব রহ. বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন সহ ইতিহাস আলোচনা করে উলামায়ে কেরামের এই অবস্হার জন্য রাজনৈতিক অদুরদর্শিতা ও অনভিজ্ঞতাকে মূল দায়ী করেন যে, সব আন্দোলন তো উলামা হযরাত করেন কিন্তু এ কারনে ফল আনতে পারেননা।
খতীব সা রহ এর বয়ানের পর আল্লামা মুফতী ত্বকী সাহেবের বয়ান ছিলো। তিনি বয়ানোর একপর্যায়ে অত্যন্ত বিনয়ী ভাষায় বললেন,
خطيب صاحب دامت بركاتهم نے علماے كرام كي تنزلي كے جو اسباب بيان فرماے هيں ان سب كے ساته ميرا اتفاق هے ليكن جهاں تك ميرا ناقص خيال هے، اصل سبب " اصلاح نفس كي كمى هے. حكيم الامت حضرت تهانوي رح فرمايا كرتے تهے " هم اتفاق كا نعره لگاتےتو هيں ليكن اصل سبب سے بهت دور هيں. اتفاق كي بنياد هے - ايثار اور همدردي "
"" খতীব সাহেব দা বা উলামায়ে কেরামের অধপতনের যে সমস্ত কারন বর্ননা করলেন, এর সাথে একমত পোষন করে বলছি, আমার মতে আসল কারন হলো " ইসলাহে নফস তথা ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধির অভাব।
হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহ বলতেন, আমরা সকলে ঐক্যের শ্লোগান দেই। কিন্তু আমরা মূল বিষয় থেকে অনেক দূরে।
ঐক্যের ভিত্তিই হলো " অন্যকে সম্মান প্রদর্শনমূলক প্রধান্য দেওয়া এবং অন্যের প্রতি সহানুভতি। ""
হযরত বলেন, আজ মুসলমানদের মাঝে বিশেষ করে উলামাদের মাঝে এ বিষয়গুলো একেবারে অনুপস্হিত।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আকাবির আসলাফের তরযে চলার তাউফীক নসীব করুন। আমিন

লেখক - মুফতি জিলানী হাফিজাহুল্লাহ্