~ টেন মিনিট স্কুলে ভারতের ১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ, অতঃপর? ~ ট | আল-ইন্তিফাদা
~ টেন মিনিট স্কুলে ভারতের ১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ, অতঃপর? ~
টেন মিনিট স্কুল
.
রবি টেন মিনিট স্কুলের কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই। হ্যা, সেই টেন মিনিট স্কুল যাদের সমকামিতার প্রচার প্রসার নিয়ে "রিয়েলিটি চেক বিডি" সরব হয়েছিল। নতুন করে তাদের ব্যাপারে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছুই নেই। অনলাইন এডুকেশন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা আছে এই রবি টেন মিনিট স্কুলের। শুরুতে ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি নিয়ে কাজ শুরু করলেও ধীরে ধীরে তারা আরও বিভিন্ন বিষয়ে কাজ শুরু করে।
.
শিক্ষার পাশাপাশি কৌশলে ও প্রকাশ্যে আমাদের তরুণ সমাজের মনোজগতে ঢুকিয়ে দিতে বিভিন্ন বিকৃতি, জিনা ব্যাভিচার এবং সমকামিতার মত জঘন্য বিষয়। নব্য মিশনারি সিরিজে আমরা তা বিস্তারিত তুলে ধরেছিলাম।
.
ইউনিলিভারের ক্লোজ আপ ইস্যু শেষ হতে না হতেই খবরের কাগজে আবারও শিরোনাম হল টেন মিনিট স্কুল। তাদের কার্যক্রম পুনঃসংগঠিত করার জন্য তারা পাচ্ছে ১৭কোটি টাকার অনুদান। লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, এই অনুদান দিচ্ছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি সেকইয়া ক্যাপিটাল। একটি ভারতীয় কোম্পানি।
.
দুষ্ট চক্র
.
ভারতীয় আগ্রাসন ১০ এ আমরা দেখিয়েছি কিভাবে আগ্রাসী ভারত কালচারাল স্যাবোট্যাজ এর মাধ্যমে আমাদের মনোজগতের পুরো দখল নিয়েছে। কিভাবে তারা পুরো একটি প্রজন্মের মানসিকতা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে। আসলে আমাদের উদাসীনতা এবং দ্বীনের প্রকৃত শিক্ষা না থাকার কারণেই তারা এই সফলতা পেয়েছে।
.
এই দুষ্ট চক্রটি আমাদের খুব ভালভাবে বুঝে নেয়া দরকার। তারা আমাদের আঘাত করে আর আমরা বড়জোর তার প্রতিবাদ করি, আন্দোলন করি। এতে করে তারা কখনো কিছুটা চুপ হয় বটে, কিন্তু তাদের এই চুপ হয়ে থাকা তাদের চূড়ান্ত পরাজয় নয়। কারণ, তারা জানে আমরা ক্লান্ত হয়েই যাব আর তখন তারা আবার ফিরে আসবে আগের চেয়েও জোরে সোরে এবং নতুন কৌশলে।
.
লক্ষ্য করুন, টেন মিনিট স্কুল যখন সমকামিতা প্রচার করেছিল তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক ঝড় উঠে যাওয়ায় মনে হচ্ছিল তারা বুঝি হার মেনেই নিল। কিন্তু বাস্তবে কী তা হয়েছে? বরং, তারা নতুন করে অনুদান পাচ্ছে ১৭কোটি টাকা! আপনারা কী মনে করেন, এই টাকা তারা কোথায় ব্যবহার করবে? অর্থাৎ এই দুষ্ট চক্রটি আরেকটি চক্র সম্পন্ন করল। টেন মিনিট স্কুল এখন আগের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী ও আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী।
.
মনে আছে নিশ্চয়ই আড়ং এর কথা! একজন দাড়িওয়ালা ভাইয়ের সাথে কিংবা হিজাব পরা একজন বোনের সাথে তারা কেমন আচরণ করেছিল?
অনেক প্রতিবাদ হয়েছিল তখনও। কিন্তু আড়ং কি দমে গেছে? না, তারা দমেনি। আড়ং দমেনি এই জন্য যে, তারা জানে আমরা কিছুদিন লাফাবো ঠিকই, কিন্তু এরপর আবার সেই আড়ং এর দোকানেই ফিরে যাব। কারণ আমরা তো শত্রুকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে শিখিনি। বরং আমাদের কাছে দ্বীনের পরিচয় সামান্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সমাধানের কথা হোক
.
তাই আমরা বলতে চাই, তাদের প্রতিহত করার আগে নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। যা নিয়ে আমরা গত পোস্টেও কথা বলেছি। আমাদের নিজেদের প্রকৃত পরিচয়ে ফিরে যেতে হবে। আমরা যতদিন এভাবে আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীন থাকব, ততদিন তারা প্রতিবারই সফল হয়ে যাবে, যদিও আমরা কিছু আন্দোলন-প্রতিবাদ করে বেশ আত্মতৃপ্তি অনুভব করি।
.
আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আন্দোলন, প্রতিবাদ, হ্যাশট্যাগ ঝড় সবই জরুরি, কিন্তু তা স্থায়ী সমাধান নয়। এর চেয়েও জরুরি হচ্ছে আগ্রাসী শত্রুর আদর্শ, চিন্তাধারা ও মূল্যবোধ বয়কট করা। আর এই বয়কটের জন্য জরুরি হচ্ছে নিজেদের মূল্যবোধ ও আদর্শের সাথে পরিচিত হওয়া।
.
আমরা যখন আমাদের শেকড় খুঁজে পাব, তখনই কেবল আমরা আগাছা চিহ্নিত করতে এবং তা উপড়ে ফেলতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। সময় হয়েছে শেকড়ে ফিরে যাবার। আমরা যদি আমাদের শেকড়ে ফিরে যাই, আমাদের প্রকৃত বিশ্বাস এবং আমাদের প্রকৃত জীবন বিধানে ফিরে যাই তবেই তারা ব্যর্থ হবে।
.
আমরা যেদিন ইসলামকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গ্রহণ করে নিব, ঠিক সেদিনই কি তাদের পরাজয়ের দিন নয়?
.
এমতাবস্থায় এসব বিষয় নিয়ে ভাবা জরুরি এবং ভাবার ভান ধরা বিলাসিতাই বটে!
https://t.me/realitycheckbd